পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার অভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন লক্ষ্য রয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মুক্ত প্রবেশাধিকার চুক্তি এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়েছে, প্রতিমন্ত্রী ৩ ফেব্রুয়ারি প্রিটোরিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যান্ডিথ মাশেগো দøামিনির সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিজনেস ইউনিটি সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, সংগঠনটি বাংলাদেশী চেম্বারগুলোর সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পারস্পরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী সম্ভাবনার মূল্যায়ন ও ব্যবসায়িক বিষয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন চেম্বারের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে একটি বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা বিজনেস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দøামিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের সফরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকান ও বাংলাদেশী উভয়েই ধৈর্যশীল ও উদ্যোগী মানুষ।
দøামিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় পর্যটন, টেক্সটাইল ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগে বাংলাদেশীদের স্বাগত জানান।
দøামিনি বলেন, উভয় পক্ষই যেহেতু সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করেছে, সেহেতু সম্পর্ক আরও বিকাশের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা বাড়ানো উচিত।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংস্কৃতি, সামাজিক উন্নয়ন, টেক্সটাইল, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি নিরাপত্তা ও পণ্য সরবরাহ চেইন ক্ষেত্রগুলো সহযোগিতার সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল ক্ষেত্র।
তিনি দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত পররাষ্ট্র দফতরের বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
দøামিনি বলেন, বিমান যোগাযোগ এবং বি২বি যোগাযোগ ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও যোগাযোগ উন্নয়নে সহায়ক হবে।
তিনি প্রস্তাব করেন যে, উভয় পক্ষ কৃষি ও শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞান বিনিময় করতে পারে। তিনি আশ্বাস প্রদান করেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার বাংলাদেশী আবেদনকারীদের ভিসা পদ্ধতি সহজ করার চেষ্টা করবে।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রার্থীতার পক্ষে সমর্থনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং আরও কয়েকটি প্রার্থীতার পক্ষে সমর্থন চান।
তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত লোকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে সহযোগিতা কামনা করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের প্রস্তাবের বিষয়ে দøামিনি বলেন যে, এক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে জ্ঞানের আদান-প্রদান করা এবং সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যেতে পারে।
তিনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে বিদ্যমান অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাতের আরও সম্পৃক্ততার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
উভয় পক্ষ বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য একসাথে কাজ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Comments