বাংলাদেশের নবনিযুক্ত অনাবাসিক হাই কমিশনার ড. জকি আহাদ গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সিশেলসের স্টেট হাউসে দেশটির রাষ্ট্রপতি ওয়েভেল রামকালাওয়ানের ( Mr. Wavel Ramkalawan) কাছে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশের পর সিশেলসের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের অনাবাসিক হাই কমিশনারকে তাঁর অভিনন্দন ও উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে শুভ কামনা জ্ঞাপন করেন সিশেলসের রাষ্ট্রপতি । তিনি বলেন, সিশেলস সর্বদা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
সিশেলসের রাষ্ট্রপতি ঢাকার একটি স্কুল ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও ওই দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
সিশেলসের রাষ্ট্রপতি তার দেশে বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে নির্মাণ, কৃষি ও পর্যটন খাতে নিয়োজিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি দু-দেশের মধ্যকার অনিস্পন্ন সমঝোতা স্মারক/চুক্তিসমূহ চূড়ান্ত করে স্বাক্ষরের জন্য গুরুত্বারোপ করেন।
হাই কমিশনার ড. জকি আহাদ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সিশেলসের রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং সিশেলসে উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে আশ্বাস দেন।
হাই কমিশনার ড. জকি আহাদ সিশেলসের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার উষ্ণ শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। তাঁর প্রতি প্রসারিত উষ্ণ শুভেচ্ছা ও আন্তরিক সহযোগিতার জন্য সেশেলস সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানান হাই কমিশনার । তিনি তাঁর মেয়াদকালে দু‘দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দৃঢ়করণে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার ক্ষেত্রকে নতুন পর্যায়ে উন্নীতকরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ড. আহাদ সিশেলসের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কার্যক্রম ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি সিশেলসে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়ায় দেশটির সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
সিশেলসের রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের অনাবাসিক হাই কমিশনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, উভয় দেশের সরকার পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সহযোগিতার নতুন নতুন পথ সন্ধানের জন্য ভবিষ্যতে কাজ করে যাবে।
হাই কমিশনার রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাট, চামড়া এবং অন্যান্য শিল্প খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য সম্পর্কে অবহিত করেন। হাই কমিশনার ড. আহাদ বলেন, বাংলাদেশ তার সুনীল অর্থনীতি খাতের উন্নয়নে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে সিশেলস বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সহযোগিতা করতে পারে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সিশেলসের রাষ্ট্রপতিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান হাই কমিশনার ড. আহাদ।
পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে সিশেলসের স্টেট হাউস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মো: জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ড. জকি আহাদ গত বছরের ৯ জুন বাংলাদেশ হাইকমিশন, পোর্ট লুইসে যোগদান করেন। তিনি একজন পেশাদার কূটনীতিক। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগদান করেন তিনি। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইং এবং বাংলাদেশ মিশন বেইজিং, দ্য হেগ, ম্যানচেস্টার, কলকাতা ও কুনমিং এ বিভিন্ন পদে সুনামের সাথে কাজ করেছেন।
Comments