মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৩

দেশে তৈরি হয়না এমন কাগজ আমদানিতে শুল্কহ্রাসের দাবি স্ট্যান্ডিং কমিটির

নিজস্ব প্রতিবেদক
|  ০৫ জুন ২০২২, ১৪:০৬ | আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ১৪:০৮
এফবিসিআইয়ের বৈঠক থেকে তোলা ছবি।

দেশীয় প্রস্ততকারকরা যেসব কাগজ উৎপাদন করেন না সেসব কাগজ আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন কাগজ আমদানিকারক, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং ব্যবসায়ীরা।

শনিবার এফবিসিসিআইতে আয়োজিত পেপার, পেপার প্রডাক্টস ও প্যাকেজিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়।

বক্তারা বলেন দেশে মাত্র ১১ ধরনের কাগজ উৎপাদন হয়। বাকি কাগজের যোগান আমদানি নির্ভর। কিন্তু এসব কাগজ আমদানিতে ৪৭% শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। অথচ কাগজ উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েও ভারতে আমদানি শুল্ক ১৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ১৯ শতাংশ এবং চীনে এ হার মাত্র ১৭ শতাংশ। আমদানি নির্ভরতার কারণে বাংলাদেশে এই হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ করার জোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে জাতীয় পাঠ্যক্রমের বইয়ে ব্যবহৃত কাগজ শুল্কমুক্ত করার আহ্বান জানান তারা।

কার্টন প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কাগজসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হয়না। তাই বেশিদামে পণ্য কিনে কম দামে কার্টন বিক্রি করে লোকসান দিতে বাধ্য হন তারা। এ কারণে প্রতি বছরই এই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এছাড়াও কাঁচামাল ক্রয়ের সময় ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়করের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের ওপর ৭ শতাংশ টিডিএস দিতে

তারা জানান এ বছরের এপ্রিলে রপ্তানিতে আগ্রহী করে তুলতে আংশিক রপ্তানিতব্য পণ্যের আমদানিকৃত কাঁচামাল ও প্রয়োজনীয় উপকরণ শতভাগ ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে ইউডি ও ইউপির ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ছাড় প্রদান করার নির্দেশনা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোন সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী জানান, বিশ্বে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং পণ্যের আউটসোর্সিং বাজারের আকার ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বাজার ধরার জন্য বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের চেষ্টা করা উচিৎ। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি প্যণ্যের উৎপাদন খরচের ১৫ শতাংশ ব্যয় হয় প্যাকেজিং খাতে। সে হিসেবে এ খাতের পরোক্ষ রপ্তানি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার। তাই দেশের অর্থনীতিতে প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং খাতের অবদান অনেক। কিন্তু সে অনুযায়ী সরকারের নীতি নির্ধারণে পর্যাপ্ত মনোযোগ পাচ্ছে না। এ খাতের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দেন তিনি।  

স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, কাগজ ও কাগজজাত পণ্যখাতের উন্নয়নের উৎপাদক ও আমদানিকারকদের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমন্বয় প্রয়োজন। এসময় দেশীয় কাগজজাত পণ্য উৎপাদকদের বিদেশী বাজার বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরার জন্য আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ এশারত হোসেন বলেন, সরকারি নীতি সহায়তা পেলে প্রিন্টিং খাত তৈরি পোশাকের মতোই অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআইর পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, হারুন অর রশীদ, রেজাউল ইসলাম মিলন ও এফবিসিসিআইর মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হকসহ অন্যান্যরা।