রোববার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
Sunday, 24 November, 2024

সেতারা মুসা: সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

দিলরুবা খান:
  28 Feb 2024, 23:04
সেতারা মুসা: সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র....................................ছবি: সংগৃহীত

এ দেশের  নারী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে  যে কজন নারী পথ দেখিয়ে গেছেন  সেতারা মুসা তাদের অন্যতম।  আজ তার ৮৪ তম জন্মদিন। তার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ষাটের দশকের পটভুমিকায় একজন নারীর সাংবাদিকতা পেশায় এগিয়ে আসা নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। সেতারা মুসা তেমনি  এক ব্যাক্তিত্ব। শুধু সাংবাদিকতাই নয়, তিনি ছিলেন  প্রাণচাঞ্চল্যে  ভরপুর  কর্মমুখর এক নারী। যে হাতে তিনি   নিপাট  পরিপূর্ণ ভাবে সংসার স্বামী,সন্তান সামলেছেন, সেই হাতেই তিনি  কলম ধরেছেন।   হাল  ধরেছেন সাংবাদিকতার মতো চ্যস্লেঞ্জিং পেশায়। সেইসংগে  সম্পৃক্ত থেকেছেন নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক  নানা  সংগঠনের সংগে। প্রতিটি কাজেই ছিল তার  ছিল স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ। সেতারা মূসার কাছে  সংসার  এবং কর্মক্ষেত্র  সমান গুরুত্ব পেয়েছে। তাইতো তিনি সব কিছুতেই রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ  অবদান।উজ্জলতার সাক্ষর।  

সেতারা  মুসার জন্ম ১৯৪০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার লাকসামে নানার বাড়িতে।

তার বাবা ততকালীন পাকিস্তান অবজার ও পরে বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার প্রখ্যাত সম্পাদক আব্দুস সালাম। সেতারা মুসা  সাত বছর  বয়স পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন। বাবা ছিলেন ব্রিটিশ আমলে সিভিল সাপ্লাই ডিপার্টমেন্টের উচ্চপদস্থ   কর্মকর্তা। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সেতারা মূসা সপরিবারে  ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে নারীশিক্ষা মন্দির পরে কামরুন্নেসা স্কুলে পড়াশোনা করতেন। ক্লাস নাইনে পড়াকালীন  সাংবাদিক এবিএম মুসার সংগে তার বিয়ে হয়। বিয়ের আগে  বাবা মায়ের  উৎসাহ  ও প্রেরণা পেয়েছেন, বিয়ের পর সেই দলে যুক্ত হলেন স্বামী। তার ইচ্ছেতেই পড়াশোনাটা চালিয়ে  যান। ১৯৬০ সালে প্রাইভেটে পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে আইএ এবং বিএ পাশ করেন।১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে  বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম এ পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি কর্মজীবনে  প্রবেশ করেন  তৎকালীন  পুর্বদেশ পত্রিকায় ফিচার  এডিটর  হিসেবে। 

পাশাপাশি তিনি পূর্ব দেশে নারীপাতার দায়িত্বও পালন করতেন। ।  এই কাজের পাশাপাশি তিনি সাপ্তাহিক চিত্রালীতে এস এম নামে টিভি সমালোচনা মুলক কলাম লিখতেন, যা সেইসময়  বেশ জনপ্রিয়তা পায়। রেডিও  টিভিতে ছোট একাংকিকা লিখতেন, অংশ নিতেন  নানা অনুষ্ঠানে। স্বাধিনতার পর কিছুদিন তিনি সরাসরি কোনো  পত্রিকার সংগে জড়িত ছিলেন না।

এরপর  তিনি সচিত্র স্বদেশ  এবং পরে দৈনিক জনতা পত্রিকার  মহিলা পাতার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

তার এইসব কাজের জন্য স্বামী কিন্তু  একটুও বিরক্ত হননি, বরং স্ত্রীকে  দায়িত্ব  পালনে পুর্ণ সহযোগিতা করেছেন। এক সময় এই দম্পতির  ঘর আলো করে আসে  তিন মেয়ে এবং এক ছেলে সন্তান। তাদের পড়াশোনা, দেখভাল-  
স্ত্রীর পাশাপাশি  সামাল দিয়েছেন স্বামীও।  ছেলেমেয়েরাও  একসময়  বুঝে গেছে মায়ের  
কাজের ধরন। তারাও পড়াশোনা করে স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ  অবদান।

সেতারা মূসা নারী সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়ন  ও  সমস্যা সমাধানকল্পে  গঠন করেন মহিলা সাংবাদিক ফোরাম। এই ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার সংগে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির সদস্য, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট  সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ভূতপূর্ব এবং আজীবন সদস্য। বাংলাদেশ গার্লস গাইড এসোসিয়েশনের ঢাকা অঞ্চলের  কমিশনার, ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি করপোরেশন  ভূতপূর্ব  ওয়ার্ড চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চীন মৈত্রী  সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।   

সেতারা নিজ উদ্যোগে পাড়ায় নারীদের নিয়ে ‘গঠন  করেন  সুরুচি সংসদ’’। এই সমিতির মাধ্যমে পথ শিশুদের  জন্য বিনা বেতনে  একটা  স্কুল পরিচালনা করতেন। ২০০৩ সালে অসুস্থ  হওয়ার আগে পর্যন্ত ঐ স্কুলটি তিনি চালিয়ে যান।

এছাড়া নারীমুক্তি আন্দোলনের তিনি সহ সভাপতি, দু:স্থ নারী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা এবং ওয়ার্ল্ড ডিভিশনের চাইলল্ড সারভাইভাল প্রজেক্টর, মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডস্থ  প্রতিবেশি  স্বাস্থ্য কমিটির  আহবায়িকা। মিতালী শিল্পী গোষ্ঠীর সহ সভাপতি এবং  সুরভী সংগীত  নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। 
   
সেতারা মূসা দেশ বিদেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ  সভা সেমিনারে  অংশ নিয়েছেন। ভ্রমণ করেছেন নানান দেশ।  তার এত সব কর্মকাণ্ডে ভীষণ  খুশি  এবং গর্বিত ছিলেন স্বামী এবিএম মূসা।

সংসার জীবনে প্রবেশ করার পর মেয়েদের চাকরি বিশেষ করে সাংবাদিকতার  মতো চ্যালেংজিং পেশায় কাজ করা চাট্টিখানি কথা নয়, কিন্তু সেতারা মূসার  ক্ষেত্রে পরিবার ও কর্মক্ষেত্র  দুটোই সমান গুরুত্ব  পেয়েছে। তাইতো  সংসার স্বামী সন্তানের   দায়িত্ব পালন করেও  তিনি   নিষ্ঠার সংগে  কাজ করেছেন কর্মক্ষেত্রে। এরপরও  বিভিন্ন সংগঠনের   কাজে তার ছিল স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ।  

২০২৩ সালের ১৪ মার্চ ঢাকার একটি  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বহু প্রতিভার অধিকারী  কর্মহুল  এই নারীর জীবনাবসান ঘটে। তার আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সেতারা মূসা নারী সাংবাদিকদের  পেশাগত মান উন্নয়ন  ও  সমস্যা সমাধানকল্পে  গঠন করেন মহিলা সাংবাদিক ফোরাম। এই ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার সংগে জড়িত ছিলেন।বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির সদস্য, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট  সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ভূতপূর্ব এবং আজীবন সদস্য। সংলাদেশ গার্লসগাইড এসোসিয়েশনের ঢাকা অঞ্চলের কমিশনার,ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটি করপোরেশন  ভূতপূর্ব  ওয়ার্ড চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চীন মৈত্রী  সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।   সেতারা নিজ উদ্যোগে  পাড়ায় নারীদের নিয়ে ‘ গঠন  করেন  সুরুচি সংসদ’’। এই সমিতির মাধ্যমে পথ শিশুদের  জন্য বিনা বেতনে  একটা  স্কুল পরিচালনা করতেন। ২০০৩ সালে অসুস্থ  হওয়ার আগে পর্যন্ত ঐ স্কুলটি তিনি চালিয়ে যান। 

এছাড়া  নারীমুক্তি আন্দোলনের তিনি সহ সভাপতি, দু:স্থ নারী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা  এবং ওয়ার্ল্ড ডিভিশনের চাইলল্ড সারভাইভাল  প্রজেক্টর, মোহাম্মদপুর  ইকবাল রোডস্থ  প্রতিবেশী  স্বাস্থ্য কমিটির  আহবায়িকা। মিতালী শিল্পী গোষ্ঠীর  সহ সভাপতি এবং  সুরভী সংগীত  নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। 
   
সেতারা মূসা দেশ বিদেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ  দভা সেমিনারে  অংশ নিয়েছেন।ভ্রমণ করেছেন নানান দেশ। ২০০৩ সালে অসুস্থ  হওয়ার আগে পর্যন্ত ঐ স্কুলটি  তিনি চালিয়ে যান। তার এত সব কর্মকাণ্ডে ভীষণ  খুশি  এবং গর্বিত ছিলেন স্বামী এবিএম মূসা।

সংসার জীবনে প্রবেশ করার পর মেয়েদের চাকরি বিশেষ করে সাংবাদিকতার  মতো চ্যালেংজিং পেশায় কাজ কিরা চাট্টিখানি কথা নয়,কিন্তু সেতারা মূসার  ক্ষেত্রে পরিবার ও কর্মক্ষেত্র  দুটোই সমান গুরুত্ব  পেয়েছে। তাইতো  সংসার স্বামী সন্তানের   দায়িত্ব পালন করেও তিনি   নিষ্ঠার সংগে  কাজ করেছেন কর্মক্ষেত্রে। এরপরও  বিভিন্ন সংগঠনের   কাজে তার  ছিল স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ। । 

২০২৩ সালের ১৪ মার্চ ঢাকার একটি  হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বহু প্রতিভার অধিকারী  কর্মহুল  এই নারীর জীবনাবসান ঘটে।তার আত্মার প্রতি জানাই  গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Comments

  • Latest
  • Popular

শেখ হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে যা জানা গেল

নির্বাচনে আ.লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস

সংসদে ড. ইউনূসকে নিয়ে যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়ার সঙ্গে মাহফুজ-আসিফ-নাহিদের কুশল বিনিময় 

নির্বাচন নিয়ে যা বললেন নবনিযুক্ত সিইসি

মাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার সাদের জামিন নামঞ্জুর

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে শিল্পকলায় ভাস্কর্য কর্মশালা

সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন বেগম খালেদা জিয়া

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন নাসির উদ্দীন

১০
গণমাধ্যমে মার্কিন জনগণের অনাস্থা কমছে
আমেরিকান জনগণ বহুদিন ধরেই গণমাধ্যমের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি উপলব্ধি করে আসছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ ১৯৭২ সালে
বাল্যবিবাহ নিরোধ কোন পথে?
বিবাহ সম্পাদন বা নিবন্ধনকালে নারী বা পুরুষ কারো বয়স আইনে নির্ধারিত বয়সের চেয়ে কম হলে
বাংলাদেশে ক্ষমতার রূপান্তর এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা
আমাদের দেশে নেতার ছেলে-মেয়ে নেতা হবে, এমপির বউ-ছেলে এমপি, অন্যান্য দেশে যদিও একটু ডিফ্রেন্ট, যেমন
দুর্নীতি রোধে স্বকীয়তা বাড়ছে
ব্যুরো হতে কমিশনে রূপান্তরের পর থেকে আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুর্নীতি দমন
Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'