
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে আজ পালিত হচ্ছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতি আজ স্মরণ করছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের।
দিবসের শুরুতে আজ সকাল ৭টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
এরপর সেখানে শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনিও সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ এলাকা সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকাররা জাতিকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক ও শিল্পীসহ বরেণ্য ব্যক্তিদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরে রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন বধ্যভূমিতে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. আলীম চৌধুরী, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, ডা. ফজলে রাব্বী, সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান (লাডু ভাই), আ ন ম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভীনসহ আরও অনেকে।
দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকার নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দিনভর শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন শহীদদের পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের আদর্শ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।
Comments