
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হস্তান্তর করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ''আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকান্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার সামিল''।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ''আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে''।
এর আগেও কয়েক দফায় শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছিল বাংলাদেশ। এজন্য চিঠিও পাঠানো হয়েছিল।
যদিও ভারত এ ধরনের অনুরোধে কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কয়েকবার জানিয়েছেন, তাকে ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ভারতের কাছ থেকে কোনো ইতিবাচক উত্তর আসেনি।
রায়ের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায়।
“এই রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, “জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায়কে ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। তবে সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে”।
“সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যে কোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
Comments