রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহনকারী সেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কবলিত রুশ জাহাজটির পণ্য চীনে খালাস করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এ কথা বলছেন বিশ্লেষকরা।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, চীনে ওই জাহাজটির পণ্য খালাসে কোনো সমস্যা দেখছেন না তিনি। আইনসিদ্ধ সহযোগিতায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রুশ জাহাজের সরঞ্জাম চীনে খালাসের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশটির রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আশা করি, কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা সাধারণ আইনসিদ্ধ সহযোগিতায় প্রভাব ফেলতে পারবে না। এ জাহাজটি নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা উচিৎ ছিল না। নিষেধাজ্ঞাটি বহুপক্ষীয় নয়। জাতিসংঘেরও নয়।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রুশ পতাকাবাহী জাহাজ ‘উরসা মেজর’ সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সরঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে পণ্য খালাসের অনুমতি না পাওয়ায় ওই জাহাজটি ভারতে পণ্য খালাস করার চেষ্টা করে। সেখানেও ব্যর্থ হয়ে চীনের দিকে রওনা হয় রূপপুরের পণ্য বহনকারী জাহাজটি।
‘উরসা মেজর’ নামের রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, ওই জাহাজটি 'উরসা মেজর' নয়। এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা 'স্পার্টা ৩ এ' জাহাজ। রঙ ও নাম বদল করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজটি রূপপুরের পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে। জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর ৯৫৩৮৮৯২। যা ‘স্পার্টা ৩’-এর সনদ নম্বর। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে মোংলা বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ভিড়তে না পেরে জানুয়ারিতে জাহাজটি ভারতের হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের চেষ্টা চালিয়েছিল। ভারতে সরঞ্জাম খালাস করে বাংলাদেশে নিয়ে আসার পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। তবে মার্কিন চাপে জাহাজটিকে ভারতেও পণ্য খালাস করতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে জাহাজটি ভারত ছাড়তে বাধ্য হয়।
জাহাজের অবস্থান শনাক্তের ওয়েবসাইট গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টিলিজেন্স মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের ১৫ জানুয়ারির সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি বর্তমানে বঙ্গপোসাগরের ভারতীর অংশে রয়েছে। জাহাজটি রুট পরিবর্তন করে চীনের সিএনএসটিজি (সায়েনথো বন্দরের) দিকে যাচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি জাহাজটির চীনের ওই বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।