সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Monday, 12 May, 2025

সংস্কারের অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ, ছাড় হতে পারে ৬৮.১০ কোটি ডলার

ঢাকাডিপ্লোমেটডটকম ডেস্ক
  19 Oct 2023, 20:40
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ছবি: এএফপি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের যে ঋণ দিয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করা হতে পারে। আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় তাদের মিশন শেষ করেছে এবং সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। দ্বিতীয় কিস্তিতে সব মিলিয়ে ৬৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় করার কথা রয়েছে।

আইএমএফের মিশনের শেষ দিনে আজ প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে এই সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকার ঋণ কর্মসূচির প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন করার বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে।

এতে বলা হয়, প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন হওয়ার পর এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি বা বর্ধিত ঋণ তহবিল (ইসিএফ) ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় ৪৬ কোটি ২০ লাখ আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার ঋণ ছাড় হওয়ার কথা। অর্থাৎ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে মোট ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় হতে পারে।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল আজ মিশনের সর্বশেষ দিনে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।

আইএমএফের প্রতিনিধিদলের প্রধান রাহুল আনন্দ বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ও আইএমএফের প্রতিনিধিদল ২০২৩ সালের আর্টিকেল ৪ পর্যালোচনা করেছে এবং ইসিএফ/ইএফএফ/আরএসএফের অধীনে প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন করতে যেসব প্রয়োজনীয় নীতি গ্রহণ করতে হবে, সে বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের ঐকমত্য হয়েছে।

বাংলাদেশে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে যে অগ্রগতি হয়েছে, আইএমএফের প্রতিনিধিদল তাকে স্বাগত জানিয়েছে। সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জিং পরিবেশের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার যে নীতিগত ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে, তাকেও স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ।

তবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এবারের আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিনিধিদল প্রতিবেদন প্রণয়ন করে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য পেশ করবে। পর্ষদ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে বলে মনে করে আইএমএফ। তাদের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবছরের শেষার্ধে মূল্যস্ফীতির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্প মেয়াদে ধারাবাহিকভাবে বাড়বে এবং মধ্য মেয়াদে চার মাসের আমদানির সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থাকবে বলে তাদের পূর্বাভাস। তবে এই পূর্বাভাস ঘিরে উচ্চ মাত্রার অনিশ্চয়তা আছে বলেও জানিয়েছে তারা, ঝুঁকিও আছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএমএফ আরও জানায়, স্বল্প মেয়াদে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে বাংলাদেশকে আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন মুদ্রা সরবরাহ আরও সংকুচিত করা এবং তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতি ও মুদ্রার বিনিময় হার আরও নমনীয় করা।

স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। এ ছাড়া অর্থনীতি যেভাবে নানা কারণে ব্যাহত হচ্ছে, তার প্রভাব যেন অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর ওপর যেন তেমন একটা না পড়ে, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংক যে ৪ অক্টোবর নীতি সুদহার ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে তারা।

বিবৃতিতে রাহুল আনন্দ আরও বলেন, সামাজিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের কর-জিডিপির অনুপাত অনেক কম, এই পরিস্থিতিতে টেকসইভাবে কর সংগ্রহ বাড়াতে সমন্বিত কর নীতি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ ছাড়া ভর্তুকির যৌক্তিকীকরণ, ব্যয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলা করা গেলে সামাজিক নিরাপত্তা খাত ও প্রবৃদ্ধি সহায়ক বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হবে তিনি মনে করেন।

অর্থনীতির বহিঃস্থ খাতের ঝড়ঝাপটা মোকাবিলায় মুদ্রা ও বিনিময় হার নীতি কাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং ব্যবস্থাপনার উন্নতি গুরুত্বপূর্ণ। সুদহারের ক্ষেত্রে করিডর ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং একীভূত একক বিনিময় হার গ্রহণের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ। তাদের পরামর্শ, এর ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংককে সুদের হারের ‘টার্গেটিং ফ্রেমওয়ার্ক’ পুরোপুরি চালু করাসহ ধীরে ধীরে নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থায় যেতে হবে।

এদিকে দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থায়নের চাহিদা মেটাতে ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা মোকাবিলা করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে আইএমএফ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ হ্রাস করা, তত্ত্বাবধান বৃদ্ধি করা, শাসনব্যবস্থা জোরদার করা ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর উন্নতি করা গেলে আর্থিক খাতের দক্ষতা বাড়বে। এ ছাড়া প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অভ্যন্তরীণ পুঁজিবাজারের উন্নয়ন অর্থায়ন প্রক্রিয়া গতিশীল করতে সহায়তা করবে।

Comments

  • Latest
  • Popular

সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ গমন, তদন্তে তিন উপদেষ্টার কমিটি

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর মোদিকে চিঠিতে যা লিখলেন রাহুল

কোনো দলকে নিষিদ্ধ করলেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় না: কাদের সিদ্দিকী

রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

গেজেটের পরই আ.লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি

পরিবারে মা হচ্ছেন এক বিস্ময়কর প্রতিষ্ঠান: তারেক রহমান

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

তীব্র গরমে নাকাল জনজীবন

বিশ্ব মা দিবস আজ

১০
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুমাইয়ার কৃতিত্ব, ব্যাংকিং খাতে নতুন দিগন্ত
বর্তমান যুগে আর্থিক প্রযুক্তির অগ্রগতি কেবল সুবিধা নয়—এটি একটি প্রয়োজন। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন
বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমকে কারাগারে পাঠানোয় অ্যামনেস্টির উদ্বেগ
বিশেষ ক্ষমতা আইন ব্যবহার করে মডেল মেঘনা আলমকে আটকের পর কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ
ইউএসএআইডি কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউএসএআইডি’র দুই হাজার ২০০ কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন
Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'