ভারত ও পাকিস্তানের নিজেদের মধ্যকার উত্তেজনা নামিয়ে আনা উচিত মন্তব্য করছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই পারমাণবিক শক্তিধর দুই এশীয় প্রতিবেশীকে নিয়ন্ত্রণ করে না এবং তাদের মধ্যে যুদ্ধ মোটেও ‘আমাদের দেখার বিষয় নয়’।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজের ‘দ্য স্টোরি উইথ মার্থা ম্যাককালাম’ অনুষ্ঠানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স এসব কথা বলেছেন।
ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি শান্ত হোক। তবে এই দেশগুলোকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমরা বড়জোর এই দেশগুলোকে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পারি। তবে আমরা এমন যুদ্ধের মধ্যে জড়াতে চাই না যা মূলত আমাদের দেখার বিষয় নয়। এটা এমন কোনো বিষয় নয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ আছে।’
চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলা করতে চাওয়া যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। পাকিস্তানও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ। তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তানের গুরুত্ব কমে গেছে।
ভ্যান্স বলেন, ‘আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি শান্ত হোক। তবে এই দেশগুলোকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমরা বড়জোর এই দেশগুলোকে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পারি। তবে আমরা এমন যুদ্ধের মধ্যে জড়াতে চাই না যা মূলত আমাদের দেখার বিষয় নয়। এটা এমন কোনো বিষয় নয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ আছে।’
কয়েকজন বিশ্লেষক এবং সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে কূটনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের দিকেই এখন যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ। আর সে কারণে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা শুরুর প্রাথমিক সময়টাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ দুই দেশ খুব একটা সরাসরি চাপ না–ও দিতে পারে। ভারত-পাকিস্তানকে নিজেদের মতো ছেড়ে দিতে পারে ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বড় সংঘর্ষ চলাকালে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আরও বেশি পাল্টা হামলা ‘ক্রমাগত অনিবার্য’ হয়ে উঠছে। এদিন পাকিস্তান ও ভারত একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলার অভিযোগ এনেছে। দুদিনের লড়াইয়ে প্রায় চার ডজন মানুষ নিহত হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর চির বৈরী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে এ উত্তেজনা শুরু হয়। পেহেলগামের সে হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে পাকিস্তান সে অভিযোগ অস্বীকার করে এবং এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে।
বৃহস্পতিবার ভ্যান্স বলেন, ‘আমাদের আশা, এই পরিস্থিতি যেন আরও বড় আকারের আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ না নেয়। ঈশ্বর না করুন, এটি যেন পারমাণবিক সংঘাতে রূপ না নেয়।’
সম্প্রতি ওয়াশিংটন নিয়মিতভাবে দুই দেশের সঙ্গেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি দুই পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান এবং সরাসরি সংলাপের ওপর জোর দেন।
গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, তিনি আশা করেন দুই দেশ পাল্টাপাল্টি হামলা থামাবে। ‘দায়িত্বশীল সমাধান’-এর পথে এগোনোর জন্য দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
Comments