রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শীতের সবজিতে সস্তি ফিরে এসে সেছ। গত সপ্তাহেও অতিরিক্ত দামে নাকাল হয়েছেন নগরীর মানুষ।
বিক্রেতারা বলেছেন অবরোধে তাদের বিক্রিতে সমস্যা হচ্ছে না। রাজধানীর বড় বড় সবজির বাজারগুলো থেকে যদিও পণ্য আনতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম চার থেকে পাঁচ টাকা কম দাম বিক্রি করছেন তারা। তাতে শীতের সবজির স্বাদ নিতে পারছে ক্রেতা।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সরেজমিন রাজধানীর কৃষি কাচাবাজার মার্কেট, আদাবর কাঁচাবাজার , পাড়ামহল্লা এবং ফুটপাতের ভ্যানে খুচরা দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, করলা, বেগুন, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাক-সবজিতে বাজার ভরপুর। তবে কোনো সবজির দামই গত সপ্তাহের জায়গায় নেই। এসব সবজির অধিকাংশটির দামই শুরু হচ্ছে ২০- ৫০, ৭০ ও শুধু টমেটোর দাম ও করল্লার দাম বেশি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায় আর করল্লা ৮০-১০০ টাকায়। শিম, বেগুন দাম এখন আর আগের মতো নেই।
তাছাড়া নতুন ফুলকপি পিস ৩০-৫০ লাউ ২০-৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, বেগুন , শালগম ৫০-১০০ টাকা, মূলা ৪০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। পিছিয়ে নেই শসা, গাজরের দামও। দেশি শসা ৫০-৭০ টাকা, হাইব্রিড গাজর ১০০ টাকা ও বরবটি ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা, দেশি আদা ২২০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৭০-১৮০ টাকা এবং শুকনা লাল মরিচ ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে লাউশাক প্রতি মুঠা ৪০-৫০ টাকা, পালং শাক১৫ লালশাক ১০ টাকা, কলমি শাক, কচু শাক ১০-১৫ টাকা সবধরনের শাকের এখন ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। কৃষি বাজারের ব্যবসায়ী নুরুন্নবী বলেন, টমেটোর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। আগাম সবজি দাম তো একটু বেশিই পড়বে। তাছাড়া অবরোধের কারণে আড়তেই দাম দিতে হচ্ছে। তবে শীতের পুরো মৌসুম শুরু হলে দাম মানুষের নাগালে আসবে। শুধু তাই নয় এবার বৃষ্টি না থাকায় শাক-সবজির ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে হরতাল অবরোধে কোন প্রভাব পরেনি বলেও তিনি জানান। প্রচুর শাক-সবজি সাভারসহ আমিনবাজার এবং ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছে, তাই কোন প্রভাব পরেনি।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, শাকসবজি গত সপ্তাহের চেয়ে কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে। বাড়তি দামে শাকসবজি কিনতে হচ্ছে না। বাজার করতে আসা রাহেলা জানালেন, তিনি বাসা বাড়িতে কাজ করে ফিরার পথে সবজি কিনতে বাজারে এসেছেন। রাহেলা বেগম বলেন, গত সপ্তাহেও হিসাব করে কেনাকাটা করতে হয়েছে, আজ শুক্রবার দেখছি শাক-সবজির দাম কমেছে, কমেছে গরুর মাংসের দামও । আগে গরুর মাংস কিনতে হয়েছে ৮০০ টাকায় আজ আদাকেজি মাংস কিনলাম ৩৭৫ টাকায়। মনে হচ্ছে বাড়তি দামের লাগাম টানা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বস্তির খবর নেই মুদিপণ্যেও। বুটের ডাল ৯০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭০ টাকা, মসুর ডাল ভারতীয় ১১০ টাকা, দেশি ডাল ১৩৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও খোলা চিনিগুড়া চাল ১৩৫ টাকা, মিনিকেট চাল মানভেদে ৬৫, ৬০, ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০-৭৫ টাকা, চিনি ১৩৭ টাকা, গুঁড়াদুধ ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১৭০ টাকা। রুপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ কেজির সয়াবিন তেলের বোতলের দাম হয়েছে ৮০০ টাকা এবং পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা কেজি দরে।
Comments