যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় যাওয়ার দুদিন পরেই নিখোঁজ হয়েছেন বাংলাদেশি সাংবাদিক জাহিদুর রহমান। তার সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ও তাদের বহনকারী গাড়িটির চালকও নিখোঁজ রয়েছেন।
ঢাকার পাশেই সাভারে বাসিন্দা জাহিদুর রহমান বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি একাধিক দৈনিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন।
সাভারের এনাম মেডিকেল করেজ হাসপাতালের অন্যতম পরিচালক জাহিদ। ওই মেডিকেলের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিমন্ত্রী ও সাভারের সংসদ সদস্য এনামুর রহমান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৩ মার্চ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে যান জাহিদুর। ভ্রমণের নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রতিবেদন করেন, ফেইসবুকেও অনেকগুলো পোস্ট দেন। গত ২১ মার্চ তিনি লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলীতে পৌঁছান।
সেখানে পৌঁছানোর পরদিন জাহিদুর ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “লন্ডন থেকে লিবিয়া। গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশটিতে প্রবেশ ছিল রীতিমতো চালেঞ্জের। লন্ডন যাবার আগেই তাই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ভিসা সংগ্রহ করেছিলাম ঢাকা থেকে। তা সত্ত্বেও ইমিগ্রেশন অতিক্রম শেষে পদে পদে ছিল ভয়- ভোগান্তি দুটোই। এর প্রধান কারণ নিরাপত্তাহীণতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতি এক কথায় ভয়াবহ।”
ফেইসবুক দেখাচ্ছে গত ২৩ মার্চ ২টা ৪৫ মিনিটে সর্বশেষ পোস্ট দেন তিনি। ওই পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি ত্রিপলির কারিন্থিয়া হোটেলে রয়েছেন। হোটেলটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ কঠিন।
জাহিদুরের স্ত্রী জাহিদুর তাসলিমা রহমান রোববার রাতে বলেন, “হঠাৎ করে তার কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ২৩ মার্চ দুপুরে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম যে তাঁর সঙ্গে অস্বাভাবিক কিছু ঘটেছে। তিনি এখন নিখোঁজ। তার ফোন বন্ধ, তিনি অনলাইনেও নেই। সাধারণত এমনটা করেন না তিনি।”
লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম-উজ-জামান ধারণা করছেন, কোনও একটা পক্ষ তাদের ধরে নিয়ে গেছে।
তিনি রোববার মধ্যরাতে বলেন, “যেখান থেকে তাদের পিক করা হয়েছে, এরকম একটা জায়গা মোটামুটি ৯০ ভাগ নিশ্চিত হয়েছি। কিন্তু যেই এজেন্সি তাদের ধরে নিয়ে গেছে, তাদের আমরা রিচ করতে পারিনি। কাল আমি ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছি, উনি সময় দিয়েছেন। যদিও এই মুহূর্তে উনি দেশে নেই, আজ আসার কথা।”
পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “আপনারা জানেন এখানে দুটো সরকার। কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা চেষ্টা করছি, বিভিন্ন লেভেলে কথা বলছি।”
Comments