নিউইয়র্কের জে এফ কে বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই ঘটনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত হামলার শিকার হয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সহযোগী ও সমর্থকেরা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, এই নিন্দনীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক স্পষ্ট ও মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এই বিধ্বংসী রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গী রাজনৈতিক নেতাদের সম্ভাব্য নিরাপত্তাঝুঁকির বিষয়টি আঁচ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক পূর্ব সতর্কতামূলক নিরাপত্তাব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রতিনিধিদলকে প্রথমে নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়। তবে অপ্রত্যাশিত ও শেষ মুহূর্তের ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রতিনিধিদলকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প নির্গমনপথ দিয়ে বের হতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার ও নিরাপত্তা–সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও দুঃখজনকভাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে প্রতিনিধিদলের ওই সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন। অনিচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নিউইয়র্কে বাংলাদেশের মিশনের মাধ্যমে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ ঘটনায় একজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রতিনিধিদলের সব সদস্যের নিরাপত্তাব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সার্বক্ষণিক ঘনিষ্ঠ ও অব্যাহত সমন্বয় রেখে চলছে।
আমরা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার প্রতি আমাদের অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা, তা বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা এর সীমানার বাইরে হোক, কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments