দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের জন্য সুখবর দিয়েছে সরকার। তবে সেখানে চাইলেই যাওয়া যাবে না। সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি অ্যাপসে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে।
এছাড়া সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা হলেন টেকনাফ ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও, পরিবেশ অধিদফতরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডের একজন প্রতিনিধি।
গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। অফিস আদেশে পর্যটকদের নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি বহন না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া সেন্ট মার্টিনে যাত্রীবাহী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেন্ট মার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সাবরীনা রহমান জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষার জন্য সরকারের এ পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দ্বীপটি বর্তমানে সংকটের মধ্যে রয়েছে। দ্বীপটির মাটি, পানি ও বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠছে। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে দ্বীপটির তাপমাত্রা কমপক্ষে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ছে। জীববৈচিত্র্য, বন ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
এ ছাড়া দ্বীপে স্থানীয় জনগণ প্রায় ১০ হাজার হলেও সারা বছর সেখানে লাখ লাখ পর্যটক আসেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সেন্ট মার্টিন ও এর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের আগস্টে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার একটি উদ্যোগ নিয়েছিল।
গবেষণা সংস্থা সিইজিআইএস জানিয়েছে, সেন্ট মার্টিনে কোনোভাবেই পর্যটকদের রাতে থাকতে দেয়া যাবে না। শীতকালে দিনে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি পর্যটক সেখানে যেতে পারবেন না।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা চাই সেন্ট মার্টিন রক্ষা পাক। এটি সবার সম্পদ। যদি পর্যটকরা দায়িত্বশীল আচরণ করেন, তবে দ্বীপটি রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এদিকে পর্যটন ব্যবসায়ীদের চাপের কারণে অতীতে সরকার কিছু পদক্ষেপ থেকে সরে এসেছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেন্ট মার্টিন রক্ষায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ছাড়া বিকল্প নেই।
Comments