বাংলাদেশে আশ্রিত হাজারখানেক রোহিঙ্গাকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় রাখাইনে ফেরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমার। প্রত্যাবাসন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আসিয়ান জোটের আটজন দূতকে মংডু এবং সিটুওয়েক প্রত্যাবাসন শিবিরগুলো সরেজমিনে দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ ) মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এসব কথা জানিয়েছে। ইয়াঙ্গুনের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাখাইনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন দূতেরা।
ঢাকা ও নেপিডোর দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রানুসারে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার এই প্রথম রাষ্ট্রীয় আয়োজনে দলবদ্ধভাবে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আসিয়ানের দূতদের রাখাইন পরিদর্শনে নিয়ে গেল। সূত্রমতে, সফরের প্রথম দিনে দূতদের টেকনাফ সীমান্তের ঠিক উল্টো দিক নাফ নদীর তীরে নকুইয়া গ্রামে পাঁচ বছর আগে স্থাপিত অন্তর্বর্তীকালীন শিবিরের সংস্কার কাজ দেখানো হয়। এসময় কূটনীতিকদের জানানো হয়, জলপথে যাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, তাদের প্রথম কিছুদিন ওই শিবিরে রাখা হবে। পরে তাদের মংডুর লাপুখা শিবিরে নেওয়া হবে। সেখানে মাসখানেক রেখে তাদের মংডু এবং সিটুওয়েকের কাছে নির্মাণাধীন শিবিরগুলোতে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে।
চীনের বিনিয়োগ তৈরি হতে যাওয়া তেল কোম্পানি এবং গভীর সমুদ্রবন্দরে জন্য বিখ্যাত চাকফু এলাকায় ২০১২ সাল থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের যে শিবির ছিল, তা-ও কূটনীতিকদের দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে বলা হয়, ওই শিবিরগুলো বন্ধ করে পাশের গ্রামে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে। ওই এলাকায় একটি মসজিদের অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান রয়েছে বলে দূতদের দেখানো হয়। তবে কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে- এমন কোনো ধারণা মিয়ানমার দিয়েছে কি না সেই সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। পাইলট প্রজেক্টের আওতায় হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে গ্রহণের মধ্য দিয়ে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বলেই শুধু জানা গেছে।
এদিকে রাখাইনে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের দূতদের সফরের খবর প্রচারের পর থেকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও পূর্ণ অধিকারের নিশ্চয়তা ছাড়া প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছে।
Comments