পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তের ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক আল আমিন (৩৬) নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাতে ঘটনাটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।
আজ সোমবার বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি শূন্যরেখায় বিজিবি ও বিএসএফের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবির ঠাকুরগাঁও সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল গোলাম রব্বানী এবং বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফের শিলিগুড়ি সেক্টরের কমান্ডার পি কে শিং। এ সময় অন্যদের মধ্যে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনিরুল ইসলাম ও নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজাসহ বিজিবি-বিএসএফের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাত তিনটার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভেতরগড় সীমান্তে ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব–পিলার–সংলগ্ন এলাকার ওপারে ভারতের ভাটপাড়ায় কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোড–সংলগ্ন এলাকায় বিএসএফের গুলিতে নিহত হন নাগরিক আল আমিন। পরে লাশটি ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি সীমান্তে চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।
ঘটনার পর দিন শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই সীমান্তে বিজিবি–বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দাবি করে, গরু নিয়ে চোরাকারবারিরা বাংলাদেশে আসার সময় বিএসএফ বাধা দিলে তাঁরা বিএসএফের ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরাও আহত হয়েছেন। পরে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে ওই ব্যক্তি মারা যান বলে দাবি বিএসএফের।
আজ বিএসএফের সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, সৌজন্য সাক্ষাতে বিএসএফকে বাংলাদেশি যুবককে হত্যার জন্য কঠোরভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএসএফ সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, যা অপ্রত্যাশিত এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে বিএসএফ জানিয়েছে, বিএসএফ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিএসএফ সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বৈঠকে তারা আশ্বস্ত করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিজিবির পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তির লাশ দ্রুত ফেরত চাওয়া হলে বিএসএফ তাঁদের দেশি আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে ভারতীয় পুলিশ-বাংলাদেশি পুলিশের মাধ্যমে লাশ ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে।
Comments