যুক্তরাজ্যের লেবার মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা সিদ্দিক ও তার খালার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। এ তদন্তের সূত্রপাত বাংলাদেশ হাইকোর্টের নির্দেশনায়, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে টিউলিপ সিদ্দিক ১০ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক চুক্তির 'দালালি' করতে সাহায্য করেছেন। এ চুক্তিটি ২০১৩ সালে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা রেহানা সিদ্দিক ও ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক। সে সময় টিউলিপ সিদ্দিক ছিলেন একজন লেবার কাউন্সিলর।
অভিযোগে বলা হয়েছে যে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তিটি বাংলাদেশে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু এ প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ অর্থ ক্রেমলিন থেকে ঋণ হিসেবে আসে। এরপর হাসিনা পরিবারের সদস্যরা রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এ অর্থ পাচারের জন্য একটি 'ভুয়া' কোম্পানি, প্রচ্ছয়া লিমিটেড ব্যবহার করা হয়েছিল। যা বাংলাদেশ থেকে ৭০৯ মিলিয়ন পাউন্ড বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে।
বাংলাদেশি মিডিয়ার রিপোর্ট ও মার্কিন ভিত্তিক নিউজ ওয়েবসাইট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প এর প্রকাশিত নিবন্ধের মাধ্যমে এসব অভিযোগ উঠে এসেছে। টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেনের বিষয়ে অনৈতিক অর্থ লেনদেনের দাবি করা হয়েছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তিনি সম্পূর্ণভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন অভিযোগগুলো ‘ভুয়া’ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে অভিযোগের তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
এছাড়া ২০১৩ সালে রাশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি অস্ত্র চুক্তি ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির সময় টিউলিপ সিদ্দিক ক্রেমলিনে উপস্থিত ছিলেন। সে সময়ের একটি ভিডিও প্রকাশিত হলে নতুন প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালার পাশে দেখা যায়। যা একটি পারিবারিক সফর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
এতসব কিছুর পর টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রী পদে থাকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। উইট ইস্টের টোরি এমপি জো রবার্টসন বলেছেন, এটি স্পষ্ট যে অভিযোগ গুরুতর ও এ তদন্তের ফলে সিদ্দিক কি তার মন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন তা জানা প্রয়োজন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এ তদন্তের বিষয়ে সিটি মিনিস্টারের দফতর কিংবা রোসাটমের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রোসাটম এর আগে জানিয়েছে, রূপপুর প্রকল্পে কোনো ধরনের অনৈতিক আর্থিক লেনদেন তাদের দ্বারা করা হয়নি। তারা স্বচ্ছতা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ----ডেইলি মেইলের খবর
Comments