বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে আরও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিতে আগ্রহী ইতালি।
আজ বিকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ইতালি ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
বৈঠকে ইতালির পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে সফররত দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মেতিও পিয়ান্তেদোসি (Matteo Piantedosi)।
উপদেষ্টা বলেন, ইতালির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের শ্রমিকরা খুব পরিশ্রমী ও দেশটির অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশটি নতুন করে বৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিতে আগ্রহী। তবে অন্য দেশের ভিসা নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাওয়ার প্রবণতাকে তারা সম্পূর্ণরূপে নিরুৎসাহিত করেছে। তিনি বলেন, ইতালি অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছে ও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা নিরাপত্তা খাতেও সহায়তা বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে যেসকল বাংলাদেশী অবৈধভাবে ইতালিতে গমন করেছেন, তাদেরকে যেন উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় বৈধতা দেয়া হয়- সে বিষয়েও ইতালিকে অনুরোধ করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ইতালির পুলিশ মাফিয়া চক্র সহ সংগঠিত ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে পারদর্শী। সেজন্য তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে চায়। তিনি বলেন, বৈঠকে আমরা পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও কোস্টগার্ডের দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে ইতালির সহায়তা কামনা করেছি।
গাজীপুরে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনায় ৫৪ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটানোর চেষ্টা করবে, তাদের কাউকেই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
বৈঠকে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ; অভিবাসন সংক্রান্ত অপরাধ নেটওয়ার্ক দমনে বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত নীতি ও কর্মপন্থা; অপরাধ দমন ও বিচার প্রক্রিয়ায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার এবং নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি প্রমুখ এবং ইতালির পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো ( Alessandro), দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিপ্লোমেটিক অ্যাডভাইজার ম্যাক্রো ভিলানি ( Macro Villani) ও ডেপুটি হেড অব কেবিনেট সাবিনা মাদারো (Sabina মাদার), ইমিগ্রেশন ও বর্ডার পুলিশের সেন্ট্রাল ডিরেক্টর ক্লাউদিও গালযেরনো (Claudio Galzeran) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সচিবালয়ে পৌঁছলে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
Comments