আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে
পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে কলকাতার প্রায় একশ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি শাখা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের ধারাবাহিকতা ধরেই এবারও ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে। তবে কত প্রতিষ্ঠানকে কী পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রপ্তানি শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবারও ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হবে। তবে রপ্তানির পরিমাণ চূড়ান্ত হয়নি। অনেকেই আবেদন করেছেন, সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করবো। দেশের প্রায় একশ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছেন। এর মধ্যে মৌসুমি ব্যবসায়ী বেশি। সেখান থেকে আমরা একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করবো। আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে বৈঠক করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, গতবার যেসব প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকে নির্ধারিত পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। অনেকে একেবারেই রপ্তানি করতে পারেনি। ইলিশ রপ্তানির বিষয়টি মূলত কী পরিমাণ ধরা পড়লো সেটির ওপরও অনেকটা নির্ভর করে। তাই আমরা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা দেখে অনুমতি দেবো। গত বছর ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেককে ৫০ মেট্রিক টন করে মোট ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
এদিকে, কলকাতা ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আসন্ন দুর্গাপূজা ২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার টন ইলিশ আমদানি করতে চায়। ইতিমধ্যে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হলেও মাত্র ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। এ বছর তারা পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ থেকে। ওই চিঠিতে আরো বলা হয়, পদ্মার ইলিশ শুধু রপ্তানিযোগ্য সুস্বাদু মাছই নয়- কলকাতার মানুষ এটাকে ঢাকার পাঠানো বহু মূল্যবান আরাধ্য উপহার হিসেবে বিবেচনা করেন। একই সঙ্গে উন্নত গুণাগুণ সমৃদ্ধ বড় সাইজের ইলিশ চেয়েছে কলকাতা। তবে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে গত বছরের চেয়ে বেশি রপ্তানি করার।
গত বছর ২০২২-এ ২ হাজার ৯০০ টন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও রপ্তানিকারকরা ১ হাজার ৩০০ টন পাঠাতে পেরেছিলেন। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে, তারা সে অনুযায়ী কাজ করছে কী না- এবার তা কঠোর নজরদারিতে রাখবে সরকার। এবার ইলিশ রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা দেখে অনুমতি দেয়া হবে। ইলিশ রপ্তানির শর্তে বলা হয়েছিল, রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪-এর বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে; শুল্ক কর্তৃপক্ষ দ্বারা রপ্তানি করা পণ্যের কায়িক পরীক্ষা করাতে হবে। প্রতিটি কনসাইনমেন্ট শেষে রপ্তানি-সংক্রান্ত কাগজপত্র রপ্তানি-২ অধিশাখায় দাখিল করতে হবে; অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি ইলিশ পাঠানো যাবে না।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে দুর্গাপূজার মৌসুমে প্রতি বছর কলকাতায় ইলিশ পাঠিয়ে আসছে ঢাকা।