হেমন্তকে বিদায় জানিয়ে ঋতুরাজ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে শীতকাল। তবে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় খানিকটা কমেছে শীতের তীব্রতা। এতে মিলেছে স্বস্তি। শীতকালীন সবজির বাজারেও স্বস্তি ফিরেছে। আলুর সঙ্গে কাঁচা মরিচের ঝাল কমতেই আছে। কমেছে পেঁয়াজের ঝাঁজও। তবে উঞ্চতা ছড়াচ্ছে চালের বাজার। ভরা মৌসুমেও দাম না কমে ঊর্ধ্বমুখী। বেড়েছে মুরগির দাম।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণত নভেম্বরের শেষ দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আলু বাজারে আসতে শুরু করে। তবে এবার বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে আলু-পেঁয়াজের বীজ বুনতে দেরি হয় কৃষকদের। ফলে চাহিদার তুলনায় কম থাকায় পণ্য দুটি বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল। অবশেষে নতুন পেঁয়াজ ও আলু আসতে শুরু করায় এ দুই পণ্যের দাম কমছে।
এদিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে দেশি পুরোনো, স্থানীয় মুড়িকাটা এবং আমদানি করা, এ তিন ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম আরও কম; এক কেজির দাম ৭০-৮০ টাকা। এ ছাড়া পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ (পুরোনো) ১১০-১৩০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে এক কেজি পুরোনো আলুর দাম ছিল ৮০ টাকা। নতুন আলুর সরবরাহ বাড়ায় দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে নতুন ও পুরোনো উভয় ধরনের আলু ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে আমনের ভরা মৌসুমের মধ্যেও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম কেজিতে ২-৫ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে চালকলের মালিকদের দাবি, ধানের দাম বাড়ায় তারা চালের দাম বাড়িয়েছেন।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট ছিল। খুচরা দোকানগুলোতে এখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে, তবে এখনো পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি। ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়। আশা করা হয়েছিল, তেলের সরবরাহ দ্রুত বাড়বে; কিন্তু তা হয়নি।
কমলাপুর বাজারের মুদি দোকানী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো পুরোদমে তেল সরবরাহ করছে না। তেল পেতে ডিলারদের সঙ্গে একধরনের তর্ক-ঝগড়া করতে হচ্ছে। এরপরও যা পাচ্ছি, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
তবে স্বস্তি মিলেছে সবজির বাজারে। মুগদা বাজারে ধরনভেদে প্রতি কেজি শিম ৪০-৮০ টাকা, মুলা ২০-৩০ টাকা, শালগম ৪০-৫০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০-১০০ টাকা, টমেটো ১০০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৫০ টাকা এবং লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Comments