প্রচুর সরবরাহ থাকার পরেও স্বস্তি ফিরেনি নিত্যপণ্যে। বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে শাক-সবজি। ৬০ টাকার নিচে মিলছে তেমন কোনো সবজি। মাছ মাংসের বাজারেও আগুন। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। লাল লেয়ার ও দেশি মুরগির দাম বেড়েছে। তবে অন্যান্য পণ্যদ্রব্যের দাম স্থির অবস্থায় রয়েছে।
শনিবার মধুবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বর্তমানে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৯০-৪০০ টাকায়। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্রেতাদের মধ্যে সোনালি মুরগি না কিনে ব্রয়লার মুরগি বেশি কেনার প্রবণতা দেখা গেছে।
সুমন নামে এক ক্রেতা জানান, সংকটের অজুহাত দিয়ে সিন্ডিকেট করে রেকর্ড দামে সোনালি মুরগি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই ব্রয়লারের দিকে ঝুঁকছি।
রাজধানীর মধুবাজার কিচেন মার্কেটের চিকেন ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. দিদার হোসেন বলেন, তীব্র গরমে খামারে প্রচুর মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে পাইকারি ও খামারি পর্যায়ে বেড়েছে দাম। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও।
তিনি আরো বলেন, গরমের কারণে ঈদের পর থেকেই বাজারে সোনালি মুরগির সংকট চলছে, যার কারণে কয়েক দফায় দাম বেড়ে এখন ৪০০ টাকায় উঠেছে।
একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি লাল লেয়ার ৩২০-৩৩০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭২০ টাকায়। তবে কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায়।
সবজির বাজারেও অস্বস্তি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, গোল বেগুন ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ৬০-৭০ টাকা, করলা ৮০-৯০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০-৫০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, শসা ৫০-৬০, ছোট সাইজের মিষ্টি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০, কাঁচা কলা ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গেল সপ্তাহজুড়ে প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া শাকের মধ্যে পাট শাক ১৫-২০ টাকা, কলমি শাক ১০-১৫ টাকা, পালং ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০-৪০ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৩০-৪০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আলু ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫-৭৫ টাকা, রসুন ১৮০-২০০ টাকা, আদা ২০০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ভেদে দাম কিছুটা কমবেশি হচ্ছে।
অপরদিকে অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ-মাংসের বাজারে। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগি এখনো হাতের নাগালে রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৯০-৪০০ টাকা। লাল লেয়ার ৩২০-৩৩০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৭২০ টাকা। বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। মাঝখানে কিছুটা কমে ঈদের সময় আবারও বেড়ে ৭৫০ টাকা হয়েছিল। এখনও সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে সাইজ ভেদে তেলাপিয়া ২২০-২৩০ ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, যা গেল সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ২৮০ থেকে শুরু করে সাইজ ভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা। এছাড়া ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ। মাছ যত বড় তার দাম ততো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
Comments