সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দ্বিতীয় দফায় আরও ৬০ দিন বাড়ানো হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার থেকে দুই মাসের জন্য তা আগের মতই সারাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় মাঠে থাকা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রথমবার ১৭ সেপ্টেম্বর দুই মাসের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরে নৌ ও বিমান বাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশনড পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও একই ক্ষমতা দিয়ে তা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তখন থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নে দেশজুড়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নিয়মিত টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেখানেও যৌথ বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিত হতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাতেও দেখা গেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের।
নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেটের বিশেষ এ ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্রথম দফায় তা আরও দুই মাসের জন্য ১৬ নভেম্বর সময় বাড়ানো হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে থেকে সারাদেশে মোতায়েন ছিল সেনাবাহিনী। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর কারফিউ তোলা হলেও বিপর্যস্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনা সদস্যদের মাঠ পর্যায়ে রেখে দেওয়া হয়। পরে যৌথবাহিনী অভিযানেও নামে।
রোববার দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৪ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬০ দিন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর তদুর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশনড কর্মকর্তারা (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) এ সময় বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পাবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির যে ১৭ নম্বর ধারায় সেনা কর্মকর্তাদেরকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেখানে এসব নির্বাহী হাকিমরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অর্থাৎ জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকার কথা বলা আছে।
ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ এবং ১৪২ ধারার অধীনে তাদের কার্যক্রম চলার কথা বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
এসব ধারায় গ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তারের আদেশ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা, তল্লাশি পরোয়ানা জারি, অসদাচরণ ও ছোটোখাটো অপরাধের জন্য মুচলেকা আদায়, মুচলেকা থেকে অব্যাহতি, বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার ক্ষমতা পাবেন বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
একই সঙ্গে স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাধা অপসারণ এবং জনগণের ক্ষতির আশঙ্কা করলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারবেন তারা।
প্রথমবার এই ক্ষমতা দেওয়ার পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর তখনকার জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান বলেছিলেন, দেশে একটি জনবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
Comments