ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে ইন্টারপোল এবং বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের পর শুনানিতে বিচারকের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, শেখ হাসিনা কোথায়? তাখন তাজুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আছেন। তবে ইন্টারপোল এবং বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিয়ে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ শুরু হয়। ব্লাকআউট করে শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর গণহত্যাসহ আওয়ামী শাসনামলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা। আর এই ১৩ আসামি ছিলেন তার সহযোগী।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে শাসনামলে এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যেটা শেখ হাসিনা করেননি। আর উপস্থিত এই আসামিরা এসব অপরাধ সংগঠনে সহযোগিতা করে গেছেন। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
পরে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, এদিন সকালে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক ৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। পরে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখায় ট্রাইব্যুনাল।
গ্রেপ্তার দেখানো আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, জুনায়েদ আহমেদ পলক, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচিত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক ইলাহি চৌধুরী, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
Comments