শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
Saturday, 18 May, 2024

উষ্ণতম এপ্রিল শেষে মে’তে মিলবে স্বস্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ডিপ্লোমেট ডটকম
  30 Apr 2024, 11:12
উষ্ণতম এপ্রিল শেষে মে’তে মিলবে স্বস্তি!...................................ছবি: সংগৃহীত

বৈশাখের টানা দাবদাহে পুড়ছে দেশ। প্রতিদিনই বাড়ছে অসহনীয় তাপমাত্রা। একইসঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে বৃষ্টির প্রতীক্ষা। এপ্রিল যেন মরুভূমির উষ্ণতা নিয়ে হাজির হয়েছে। সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে সব শ্রেণিপেশার মানুষ। তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।

তীব্র গরম অতীতের সব ধারণা পাল্টে দিয়েছে। এপ্রিল ৭৬ বছরের মধ্যে উষ্ণতম। হাঁসফাঁস প্রাণ-প্রকৃতির কাছে মাসটি যেন ফুরোতেই চায় না। স্বাধীনতার পর এবারই একটানা সবচেয়ে লম্বা তাপপ্রবাহ দেখছে দেশের মানুষ। ৩০ দিন ধরে চলা এ তাপপ্রবাহ ইতোমধ্যে ভেঙেছে রেকর্ড। 

আবহাওয়া অফিস বলছে, তাদের কাছে ১৯৪৮ সাল থেকে আবহাওয়ার যে তথ্য রয়েছে, সে হিসাবে এবারই সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের উপর দিয়ে। গত ৩১ মার্চ শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। ২০২৩ সালে টানা ২৪ দিন ছিল তাপপ্রবাহ।

এর মাঝে সুখবর মে মাসে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মে মাসে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এপ্রিলের মতো মে মাসে তাপপ্রবাহের সময়সীমা এতটা দীর্ঘ হবে না, তবে কিছু আর্দ্রতা থাকবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২ মে থেকে দেশে কিছু বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘২ মে থেকে ৪ মে পর্যন্ত বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হবে। পরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। মে মাসে দুই থেকে তিনটি মৃদু তাপপ্রবাহ এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ হতে পারে।’ 

মে মাসকে উষ্ণতম মাসগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হলেও কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এল নিনো’র নিরপেক্ষ অবস্থার কারণে আসন্ন মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম গরম হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরের পরিস্থিতি এল নিনো শুরু হওয়ার প্রায় সাত মাস পরে এখন নিরপেক্ষ অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। অন্তত জুলাই পর্যন্ত এটি নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। লা নিনা (শীতল পর্যায়) সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এল নিনো ২০২৩ সালের জুন মাসে শুরু হয়েছিল। যার ফলে সারাদেশে অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত এবং দীর্ঘ তাপপ্রবাহ শুরু হয়। 

‘এল নিনো’ আর ‘লা নিনা’ দুটি স্প্যানিশ শব্দ। এল নিনো অর্থ বালক বা ছোট ছেলে, আর লা নিনা অর্থ বালিকা বা ছোট মেয়ে। নাম দুটি সামুদ্রিক বায়ু সঞ্চালনের ফলাফলের দুই অবস্থা বোঝায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ক্রমাগত পরিবর্তন থেকেই সৃষ্টি হয় এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রার চক্রাকার পরিবর্তনের ফলে এ বৈশ্বিক জলবায়ুগত ঘটনাটি হয়ে থাকে। এর কারণে তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত উভয়ই প্রভাবিত হয়।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ু চক্র তিন প্রক্রিয়ায় আবর্তিত হয়। প্রক্রিয়াটি এনসো চক্র নামে পরিচিত। এনসো চক্রের তিনটি পর্যায় রয়েছে: এল নিনো, লা নিনা আর এনসো নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ পর্যায়। আবহাওয়ার শুষ্ক মৌসুম হলো এল নিনো পর্যায়, যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত কমে যায় আর বন্যাও কম হয়। এ সময় তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। আর লা নিনার সময় বৃষ্টিপাত ও বন্যা বেশি হয়। তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়। 

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘চলমান তাপপ্রবাহ ৩ মে’র পর বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে কমতে শুরু করবে। ৩ মে থেকে ১৩ মে এর মধ্যে, প্রচণ্ড বজ্রঝড়, তীব্র বজ্রপাত এবং শিলাবৃষ্টি সারাদেশে বয়ে যাবে, প্রায় প্রতি রাতে সিলেট বিভাগে, বিশেষ করে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে।’

আমেরিকান গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম মডেল অনুযায়ী, ১৪ মে থেকে ১৭ মে এর মধ্যে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা জানায়। এটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের মধ্যে ২০-২৪ মে এর মধ্যে স্থলভাগে আঘাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। 

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জুন থেকে সেপ্টেম্বর, বর্ষা মৌসুমের শেষার্ধ পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। এটি বলছে, এল নিনোর নিরপেক্ষ অবস্থা রূপান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ লা নিনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশের কিছু জেলায় তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে। এরপর তাপপ্রবাহ প্রায় সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা ও রংপুর বিভাগের অধিবাসীরা রীতিমতো লু হাওয়ার অনুভূতিতে হাঁসফাঁস করছেন। বহু অঞ্চলে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে দূষণ আর গরমে বিপর্যস্ত। প্রতিদিন প্রাণঘাতি গরমে হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই খুলছে এই বন্ধ হচ্ছে। সবচেয়ে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সব মিলিয়ে গরম স্থবির করে দিয়েছে পুরো দেশকে।

Comments

  • Latest
  • Popular

দেশে অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ প্রয়োজন সতর্কতা 

জাতীয় আলোকচিত্র পুরস্কার পেলেন ১৩ আলোকচিত্রী 

৩০ ব্যাংকের এমডি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন

ভাঙা হাত নিয়েই কান মাতালেন ঐশ্বরিয়া

তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, অতঃপর

আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী দল: প্রধানমন্ত্রী

র‍্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি সত্য নয়: যুক্তরাষ্ট্র 

৬ জুন বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো: প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস : শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন

১০
তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, অতঃপর
এক তরুণী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী দল: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেছেন
৬ জুন বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ৬ তারিখে বাজেট দেবো। বাজেট আমরা ঠিক মতো দিতে পারবো,
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস : শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের
Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'