ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড এক পালাতক আসামি গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। ২০ বছর ধরে পলাতক ওই আসামি বিভিন্ন ছদ্মবেশে ছিলেন।
মঙ্গলবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে ডিএমপির বিমানবন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এটিইউ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম নুর মোহাম্মদ (৪০)। তিনি সাবু, শামীম এবং মাহবুবুর রহমান নামে ছদ্মবেশে ছিলেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থাকার ঝড়াবর্ষা (কলেজপাড়া) গ্রামে। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা।
এটিইউ জানায়, নূর মোহাম্মদরে বিরুদ্ধে ডিএমপির রমনা থানার ২০০৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলা এবং ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পেনাল কোডের সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, চতুর্থ আদালতে বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের ‘পাক স্যার জামিন সাদ বাদ’ বইটি জেএমবি মতাদর্শ পরিপন্থি হওয়ায় ২০০৪ সালে জেএমবি’র আমির শায়েখ আব্দুর রহমানের নির্দেশে জেএমবি’র সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি, সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদসহ অন্যদের সঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে নুর মোহাম্মদ সরাসরি ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।
ড. আজাদ ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ‘অমর একুশে বইমেলা’ থেকে বের হয়ে বাংলা একাডেমি ও টিএসসি’র মাঝামাঝি পৌঁছালে তাকে ঘেরাও করে চাপাতি, ছুরি দিয়ে ঘাড়, মাথা, মুখ, গলা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। এরপর হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে হত্যকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ড. আজাদ চিকিৎসারত অবস্থায় জার্মানিতে মারা যান।
নুর মোহাম্মদ জেএমবির আমির শায়েখ আব্দুর রহমানের কাছে বায়াত গ্রহণ করেন এবং জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানির মাধ্যমে জেএমবি সংগঠনের দাওয়াত পান। পরে জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন, হাফেজ শহিদ, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ, শাওন, শাকিব, হাসিম, আনোয়ারুল আলম, ভাগ্নে শহিদ, মো. হাফিজ মাহমুদ, রাকিবসহ অনেকের সঙ্গেই তিনি সম্পৃক্ত হন।
২০০৪ সালে অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করলে নূর মোহাম্মদ দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ আত্মগোপনে ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় এটিইউ।
Comments