রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় একটি কনসার্টে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে গুলির আঘাতে অনেকেই যেমন মারা গেছে, তেমনি কনসার্ট হলে অগ্নিকাণ্ডেও মারা গেছে বেশ কয়েকজন।
শনিবার ক্রেমলিন বলেছে, এই হামলায় চার সন্দেহভাজন বন্দুকধারীসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
এফএসবি নিরাপত্তা পরিষেবার প্রধান আলেক্সান্ডার বোর্টনিকভ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অস্ত্রধারী ‘চার সন্ত্রাসী’ রয়েছে এবং এফএসবি তাদের সহযোগীদের শনাক্ত করার কাজ করছে।
এফএসবি আরো বলেছে, চার সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের ইউক্রেনে যোগাযোগ ছিল। গ্রেফতারকৃতদের মস্কোতে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
রাশিয়া অবশ্য এখনো সন্দেহভাজন অস্ত্রধারীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সংযোগের কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক গতকাল শুক্রবার বলেছেন যে, গতকালের হামলার সঙ্গে কিয়েভের কোনো যোগসূত্র নেই।
ইসলামিক স্টেট-খোরাসান বা আইএসকে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট-খোরাসান টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় এই দাবি করেছে। ইসলামিক স্টেট সংশ্লিষ্ট সংবাদ সংস্থা ‘আমাক’-এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করা হয় ঐ ভিডিওটি।
ভিডিওটিতে হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। তবে কীভাবে তারা হামলা চালিয়েছে বা কারা এতে যুক্ত ছিল সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি গোষ্ঠীটি।
রুশ আইনপ্রণেতা আলেক্সান্ডার খিনশটাইন বলেছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীরা একটি রেনল্ট গাড়িতে করে পালাচ্ছিল। গতকাল রাতে মস্কো থেকে প্রায় ৩৪০ কিলোমিটার (২১০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে পুলিশ তাদের দেখে থামতে বলেছিল। তবে থামার নির্দেশ অমান্য করেছিল সেই গাড়ি। এরপর গাড়িটি ধাওয়া করে দুজনকে আটক করা হয় এবং অন্য দুজন জঙ্গলে পালিয়ে যায়। ক্রেমলিন এরপর বলেছে যে, পালিয়ে যাওয়া দুজনকেও পরে আটক করা হয়েছে।
খিনশটাইন বলেন, গাড়িতে একটি পিস্তল, একটি অ্যাসল্ট রাইফেলের একটি ম্যাগাজিন এবং তাজিকিস্তানের পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র তাজিকিস্তান মূলত মুসলিম প্রধান দেশ, যা আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
এদিকে এই হামলার পর রাশিয়া বিমানবন্দর, পরিবহন কেন্দ্র এবং রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে দেশজুড়ে সব বড় আকারের জমায়েতের সব অনুষ্ঠান।
Comments