বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪
Thursday, 09 May, 2024

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে যা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সারাবিশ্ব থেকে করোনাভাইরাসের টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর বাংলাদেশে এই টিকা নেওয়াদের মধ্যে কোনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কিনা, তা খুঁজে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ৭ মে (মঙ্গলবার) ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক এ কোম্পানিটি তাদের তৈরি করা টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি ডিজি হেলথকে নির্দেশ দিয়েছি। যাদেরকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ওপর সার্ভে করে আমাকে প্রতিবেদন দেবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা প্রমাণ না পাবো, ততক্ষণ আমরা এই টিকা উঠিয়ে নেব না। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে অক্সফোর্ডের সঙ্গে গবেষণা করে ‘কোভিশিল্ড ও ভ্যাক্সজেভরিয়া’ নামে কোভিড-১৯ প্রতিষেধক দুটি টিকা বানায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা। মহামারির মধ্যে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও এই কোম্পানির টিকা সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়। কিন্তু 'কোভিশিল্ড ও ভ্যাক্সজেভরিয়া'র বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়, দেখা দেয় বিতর্ক। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর টিকাটি ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২০২১ সালের চার জানুয়ারি। এক হিসাবে, শুধু প্রথম বছরেই ৬৫ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই টিকা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করা হয়েছে ৩০০ কোটিরও বেশি ডোজ। বাংলাদেশে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হয়। শুরুতে সবাইকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়। পরে চীনের সিনোফার্ম, কোভ্যাক্স থেকে মডার্না ও ফাইজারের টিকাও আনা হয়। দেশে প্রথম ডোজেই ১৫ কোটি ৯ লাখের বেশি টিকা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ডোজে দেয়া হয় ১৪ কোটি ২২ লাখ। এছাড়া তৃতীয় ডোজে ছয় কোটি ৮৬ লাখ এবং চতুর্থ ডোজে দেওয়া হয়েছে ৫১ লাখ ৪৩ হাজার টিকা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকোর টিকা দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি, ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৬৯ হাজার ডোজ। এদিন সিরডাপ মিলনায়তের অনুষ্ঠানে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা প্রতিরোধী টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। ‘আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের দেশে কারো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে,’ যোগ করেন তিনি। সামন্ত লাল বলেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পেলে, ওইসব টিকা দেওয়া হবে না। তবে যতক্ষণ সেরকম কোনো প্রমাণ না পাবো, ততক্ষণ আমরা এই টিকা উঠিয়ে নেবো না। তিনি বলেন, আমরা এটি নিয়ে কনসার্ন। ওরা (আ্যাস্ট্রাজেনেকা) বলছে, টিকা তুলে নিতে কিন্তু আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত প্রমাণ না পাবো ততক্ষণ পর্যন্ত কীভাবে বলবো? পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই ভ্যাক্সজেভরিয়া টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে তুলে নেওয়া শুরু করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সির কাছে করোনার ভ্যাক্সজেভরিয়া টিকা তুলে নেয়ার জন্যে গত পাঁচ মার্চ আবেদন জানিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এরপর মঙ্গলবার থেকে টিকা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করে। বিশ্বের অন্যতম বড় টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেই করোনার টিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, বাজারে কোভিড-১৯ এর অনেকগুলো টিকা এসে গেছে। এর ফলে ভ্যাক্সজেভরিয়ার চাহিদা কমে উদ্বৃত্ত থাকছে। ফলে আর তৈরি বা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ভাইরাসের অনেকগুলো উপধরন তৈরি হয়ে কোভিড-১৯ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা আর প্রাণঘাতী নয়। এসব কারণের জন্যই অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাজার থেকে তাদের টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক কারণেই কোভিড-১৮ ভ্যাকসিন প্রত্যাহার করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। যুক্তরাজ্যের দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবশ্য অন্যান্য কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে এই টিকা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় বন্ধ করা হয় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে যা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সারাবিশ্ব থেকে করোনাভাইরাসের টিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া শুরু করেছে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর বাংলাদেশে এই টিকা নেওয়াদের মধ্যে কোনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কিনা, তা খুঁজে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ৭ মে (মঙ্গলবার) ব্রিটিশ-সুইডিশ বহুজাতিক এ কোম্পানিটি
আফতাবনগরে গরুর হাট বসানো যাবে না
More News