রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গারা ‘নতুন ফিলিস্তিনি’ হওয়ার ঝুঁকিতে

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ১৬:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করা দারিদ্র ও মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত অলিভিয়ারের সঙ্গে আলাপ হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে জনাকীর্ণ শিবিরে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে কাজের সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তায় টেকসই নয়।’ 

ক্যাম্পের পরিস্থিতিকে শোচনীয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির অবস্থিত বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং-এ। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এদের অনেকেই। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বিদেশি ত্রাণ সহায়তাও দিনে দিনে কমে আসছে। সেখানকার পরিস্থিতি নিজ চোখে পর্যবেক্ষণ করতে সম্প্রতি কক্সবাজারের ক্যাম্প ঘুরে দেখেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অলিভিয়ার দ্য শুটার। বাংলাদেশে থাকা রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গারা ‘নতুন ফিলিস্তিনি’ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন। এদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে এসেছিলেন। সেসময় বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে।

এত সংখ্যক রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো। যত সময় গড়াচ্ছে তা কমছে। এ বিষয়ে অলিভিয়ার বলেন, 'অন্যদিকের সংকটের কারণে ক্রমশ হিমশিম খাচ্ছেন আন্তর্জাতিক দাতারা। ফলে এখানে কমছে ত্রাণ সহায়তা।'

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তহবিলের সংকটের কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য ভাতা কমিয়ে প্রতি মাসে ৮ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের কর্মকর্তা বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো এই মানুষগুলো সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশে কাজ করার ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা আছে। তারা এক প্রকার অবরুদ্ধ। তাদের দিন কাটে অলসভাবে। ফলে লিঙ্গভিত্তিক সহিসংতা বাড়ছে। ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই নাজুক। সশস্ত্র গ্যাংগুলো মিয়ানমার সীমান্তে মাদক পাচারের মতো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে প্রায়শই এসব গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে গোলাগুলি ঘটছে।’

এসব ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক এবং সেখানকার পরিবারগুলোর হতাশার বিষয়গুলোকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি।

মিয়ামারের লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে দেশটির সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি না করায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু মিয়ানমার এখন জান্ত সরকারের অধীনে থাকা প্রত্যাবাসন প্রতিক্রিয়া এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি।

Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'