ইউক্রেন নিয়ে ফ্রান্স ও ইইউকে কী বার্তা দিলো চীন

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ২১:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য চীনকে অনুরোধ জানাতে বেইজিং সফরে রয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রধান উরসুল ভন ডের লিয়েন। বুধবার উভয়েই সাক্ষাৎ করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। বৈঠক শেষে ইইউ প্রধান বলেছেন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে আগ্রহী চীনের প্রেসিডেন্ট। এর আগে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলতে শি জিনপিংকে অনুরোধ করেন ম্যাক্রোঁ। খবর: রয়টার্সের। 

বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেনে ইইউ প্রধান ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তাদের এই বৈঠকের প্রতি নজর ছিল বিশ্বের। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইউক্রেনের সংকট অবসান এবং বৈশ্বিক শক্তিকে বিভক্ত করে দেওয়ার মতো সর্পিল উত্তেজনা নিরসনে সহযোগিতার জন্য পশ্চিমাদের উচিত চীনের কাজ করা।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংঘাতের অবসানে শি জিনপিং নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরছেন। তবে পশ্চিমারা তাকে রুশ সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেছেন, তিনি আশা করেন মস্কো ও কিয়েভ যতদ্রুত সম্ভব শান্তি আলোচনা শুরু করবে।

ইইউ প্রধান বলেছেন, জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলতে চীনা প্রেসিডেন্টের আগ্রহ প্রকাশের কথা পুনরায় শুনতে পাওয়া ইতিবাচক। শি বলেছেন, উপযুক্ত পরিস্থিতি ও সময়ে এই আলোচনা হতে পারে।

জেলেনস্কি একাধিকবার চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চাওয়ার কথা বলেছেন। এমনকি চীনা প্রেসিডেন্ট গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরও এক্ কথা বলেছেন। ফ্রান্সের একটি কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, জেলেনস্কিকে ফোন কল করতে প্রস্তুত শি।

ম্যাক্রোঁ শিকে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ বিশ্বের স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে। আমি জানি রাশিয়ার বোধ ফেরাতে এবং সবাইকে আলোচনার টেবিলে বসাতে আপনার ওপর ভরসা করতে পারি।

ইউক্রেন সংকট অবসানের জন্য চীন ১২ দফা শান্তি পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। এতে উভয়পক্ষকে ধীরে ধীরে উত্তেজনা কমিয়ে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রাশিয়ার নিন্দা না করায় পশ্চিমারা মোটাদাগে চীনের এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ওই সময় বলেছিল রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহের কথা বিবেচনা করছে চীন। এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং।

ভন ডের লিয়েন বলেছেন, আক্রমণকারীকে অস্ত্র সরবরাহ স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এতে ইইউ ও চীনের সম্পর্কে বড় ক্ষতি হবে।

ফরাসি কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে শির প্রতি অনুরোধ করেছেন ম্যাক্রোঁ। জবাবে শি বলেছেন, এটি চীনের যুদ্ধ নয়।

বৈঠক শেষে চীনা প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন ও রাশিয়াকে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু এবং সংঘাতের একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ফ্রান্সের পক্ষ থেকে শি ও ম্যাক্রোঁর আলোচনা ‘খোলামেলা ও গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর চীন দুই নেতার বৈঠককে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ ও ‘গভীর’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি না করার আন্তর্জাতিক আইন যাতে রাশিয়া মেনে চলে সেজন্য চাপ দিতে শির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। পুতিন সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিবেশী বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া। এই ঘোষণাকে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের বিপজ্জনক তীব্রতা বৃদ্ধি হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

শি বলেছেন, ‘সব দেশের উচিত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করা উচিত না’। তবে তিনি রাশিয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'