করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতির জন্য মারাত্মক আঘাত: বিশ্ব ব্যাংক

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২০, ১৫:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

নিউজ ডেস্ক চলমান করোনাভাইরাস মহামারীকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য মারাত্মক আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। মহামারী কয়েকশ কোটি মানুষের জীবিকার ভয়াবহ ক্ষতি করবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। শুক্রবার বিবিসি রেডিও ফোরের ‘দিজ ওয়ার্ল্ড দিজ উইকেন্ড’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যালপাস এসব কথা বলেছেন। অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্ব অর্থনীতির বিপর্যয় এক দশক পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গত মাসে বিশ্ব ব্যাংকের এ প্রেসিডেন্ট করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বের ৬ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। বিশ্ব ব্যাংকের সংজ্ঞানুযায়ী সেসব ব্যক্তিই ‘চরম দারিদ্র্যের’ আওতায়, যারা এক দশমিক ৯০ ডলারের চেয়েও কম অর্থে দিন কাটান। শুক্রবারের সাক্ষাৎকারে ম্যালপাস বলেছেন, মহামারীর কারণে ৬ কোটিরও বেশি লোককে দিনে এক পাউন্ডেরও কম অর্থে জীবনযাপন করতে হতে পারে। “এটা (করোনাভাইরাস) অর্থনীতির জন্য মারাত্মক আঘাত হতে চলেছে। মহামারী ও শাটডাউনের যৌথ প্রভাবে কয়েকশ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা বিঘ্নিত হতে যাচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক। উভয়ের (মহামারী, শাটডাউন) সরাসরি প্রতিক্রিয়ায় অনেকেরই রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে; এগুলোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যজনিত ও সামাজিক প্রতিক্রিয়াও নির্মম হবে,” বলেছেন তিনি। যাদের সামর্থ্য যত কম, তারাই তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও সতর্ক করেছেন ম্যালপাস। “আমরা দেখছি যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। অন্যদিকে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষরা কেবল বেকারই হচ্ছে না, এমনকি অনানুষ্ঠানিক খাতেও কাজ পাচ্ছে না। এর পরিণতি দশককাল ধরে থাকতে পারে,” বলেছেন তিনি। বিশ্ব ব্যাংক এবং এর সহযোগীরা এরই মধ্যে মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তা দিয়েছে, তবে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে এর কর্মকর্মতারা জানিয়েছেন। দরিদ্র দেশগুলোর ঋণ মওকুফে ব্যাংক ও পেনশন ফান্ডের মতো বাণিজ্যিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। কী কী শর্তে এসব ঋণ মওকুফ করা হচ্ছে, তা স্পষ্ট করতে বলেছেন ম্যালপাস। এর ফলে অন্য বিনিয়োগকারীরা সেসব দেশের অর্থনীতিতে টাকা ঢালতে আরও আস্থা পাবে, বলেছেন তিনি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব ব্যাংক অর্থনীতি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে টেনে তুলতে সরকারগুলোর সুনির্দিষ্ট সহযোগিতা ও ব্যবস্থার উপরও গুরুত্বারোপ করছে। বিনিয়োগ ও সহায়তার ফলে উৎপাদনের মতো বিভিন্ন খাতে নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে, যা পর্যটনের মতো ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর শ্রমশক্তিকে পুনঃস্থাপন করতে পারবে। মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক খাত চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা বিশ্ব ব্যাংকের। সাক্ষাৎকারে ম্যালপাস মহামারীর কারণে বিশ্ব বাণিজ্যে ক্ষতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। “বাণিজ্য কমে এলে তা তার মতো করে উত্তেজনা ও অসাম্য সৃষ্টি করে। আমি নিশ্চিত বৈশ্বিক অর্থনীতি ভবিষ্যতে আবারও পরস্পরসংযুক্ত হবে ; হয়তো কোভিড-১৯ এর আগের অবস্থার চেয়ে খানিকটা কম হবে,” বলেছেন তিনি। বিশ্ব এ ‘সর্বানাশা বিপর্যয়’ কাটিয়ে উঠবে বলেও আশাবাদী বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। “পথ বের করা অবশ্যই সম্ভব। বিভিন্ন দেশ ও সরকারগুলোকে এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমরা এ ধরনের চেষ্টাকে উৎসাহিত করতে পারি। আমি আশাবাদী,” বলেছেন তিনি। বিপর্যয় কাটাতে সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা কার্যকরের চ্যালেঞ্জকেও স্বীকার করে নিয়েছেন ম্যালপাস। আর সে সময় পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতিকেও বিবেচনায় নিতে হবে, বলেছেন তিনি।
Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'