ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে টোকিওর সঙ্গে ঢাকার ঐকমত্য

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৮:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  কূটনৈতিক প্রতিবেদক

পশ্চিমা বিশ্বের ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোতে বাংলাদেশের আরও বেশি ভূমিকা রাখার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও জাপান। এর ফলে পশ্চিমা বিশ্বের ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বৃহৎ পরিকল্পনায় বড় আকারে যুক্ত হওয়ার পথ তৈরি হলো।

টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার মধ্যে শীর্ষ বৈঠকের পরে ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি জোরালোভাবে ফুটে উঠেছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী কিশিদার আমন্ত্রণে টোকিও সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ৮টি চুক্তি ও সহযোগিতা স্মারক সই হয়েছে।

৯ পৃষ্ঠার যৌথ বিবৃতিতে প্রথমে যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি হচ্ছে— আঞ্চলিক ও অন্যান্য অঞ্চলে ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোর অধীনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা।

দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ স্থলে অবস্থিত বাংলাদেশের গুরুত্বকে স্বীকার করে নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, অবকাঠামোর উন্নতি হলে এ অঞ্চলে কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি পাবে— যা বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের উন্নয়নে সহায়ক হবে।

এছাড়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং সাইবার সিকিউরিটি ও আইসিটি উন্নয়ন বিষয়গুলোও যৌথ বিবৃতিতে উঠে এসেছে।

আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদীর মধ্যে যে বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে সেগুলো হচ্ছে— উত্তর কোরিয়া, অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এবং রোহিঙ্গা সমস্যা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ইউক্রেনের অখণ্ডতা রক্ষা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংলাপের গুরুত্ব আরোপ করে বিবৃতিতে ইউক্রেনের মানুষের প্রতি সমর্থন অব্যহত রাখার বিষয়টি বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের একদিন আগে বাংলাদেশ তার ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণা করে। ওই আউটলুকের সঙ্গে জাপানের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অনেক মিল আছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লেখা এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এরপর ২০২২ সালে ফ্রান্স সফরের সময়ে যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি আবারও উল্লেখ করা হয়।

জাপান সফরে ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে প্রথম যে সহযোগিতাটি উল্লেখ করা হয় সেটি হচ্ছে, ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়টি।

অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য বিবৃতিতে দুই পক্ষ একমত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা ও জাহাজ বা উড়োজাহাজ চলাচলে সবার অধিকার আছে, এ বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারত ও চীনের পর জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক তৈরি করলো বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে একটি বড় ঘটনা এবং এটির আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে।

এই কৌশলগত সম্পর্ক বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ অর্জনে সহায়ক হবে এবং জাপানের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বাংলাদেশকে। এর পাশাপাশি চীন, ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।

 

Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'