নওরোজ ও পহেলা বৈশাখের মধ্যে বেশ সাদৃশ্য রয়েছে- সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ২১:২৫ | অনলাইন সংস্করণ

  কূটনৈতিক প্রতিবেদক

আজ বিকালে ইরানি নববর্ষ 'নওরোজ' ও বাংলা নববর্ষ 'পহেলা বৈশাখ' উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ছবিঃ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকা

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, ইরানি নববর্ষ 'নওরোজ' ও বাংলা নববর্ষ 'পহেলা বৈশাখ' এর মধ্যে বেশ সাদৃশ্য ও সাযুজ্য রয়েছে। নওরোজ উদযাপিত হয় বসন্তের প্রথম দিন ২১ মার্চ আর পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) উদযাপিত হয় ১৪ এপ্রিল। দু'টিই বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি, মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, হিংসা-বিদ্বেষ দূরীকরণ নওরোজ বা ইরানি নববর্ষের প্রধান বার্তা। একইভাবে  অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখও আমাদের একই বার্তা দেয়।

আজ বিকালে ইরানি নববর্ষ 'নওরোজ' ও বাংলা নববর্ষ 'পহেলা বৈশাখ' উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  তিনি এসব কথা বলেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূলতঃ কৃষিকাজ ও খাজনা বা রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর বাংলা নববর্ষ চালু করেন। ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর শাসনামলে ইরানি গবেষক ফতেহউল্লাহ সিরাজী বাংলা সনের রূপরেখা প্রদান করেন যা রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে এর কিছু হিসাব সংস্কার করে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম ইরান ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও গভীর। দেশ দু'টির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ অতীতের মতো বর্তমানেও বজায় রয়েছে। কে এম খালিদ বলেন, ১৯৯৫ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাশেমী রাফসানজানী বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে ওআইসি সম্মেলন ও ২০১২ সালে ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে ইরান সফর করেছেন। তিনি বলেন, এর ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং শিক্ষা-সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় হচ্ছে। ইরান-বাংলাদেশ মৈত্রী ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী ভিত রচিত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী এসময় দু'দেশের মধ্যকার এ বন্ধুত্বপূর্ণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি বলেন, নওরোয শুধু ইরানেই সীমাবদ্ধ থাকে নি। ইন্দো-পারস্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রভাবে এটি ইরানের বাইরে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে  ছড়িয়ে পড়েছে। ২০০১ সালে জাতিসংঘে বসন্তের প্রথম দিন ২১ মার্চ বিশ্ব নওরোয দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং ২০০৯ সালে এটি মানবতার সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক নিদর্শন হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন এর সভাপতিত্বে  অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মুহম্মদ সামাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর সৈয়দ রেজা মীর মোহাম্মদী।

অনুষ্ঠানে তারা বলেন, ঈদে নওরোজ ইরানি সংস্কৃতির একটি প্রাচীন ঐতিহ্য ও আচার অনুষ্ঠান যা কয়েক হাজার বছরের পুরনো। এটি আনন্দ, নতুনত্ব ও পুনরুজ্জীবনের বার্তাবাহক। সতেজতা ও নতুনত্বের প্রতি মানুষের যেহেতু একটি স্বাভাবিক আকর্ষণ রয়েছে তাই বসন্ত ও প্রকৃতির সতেজতা মানুষের অস্তিত্বে সতেজতা ও পুনরুজ্জীবনের প্রেরণা যোগায়। নওরোজ হলো ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। বসন্ত ও প্রকৃতির নতুন প্রাণের সঞ্চারকে তারা আল্লাহর প্রদত্ত উল্লেখ করেন। একইসাথে তারা এই দিনটিকে একটি শুভ ও বরকতময় দিন হিসেবে মানুষের জীবনের প্রতিটি দিনের সমৃদ্ধি কামনা করেন।

 

Error!: SQLSTATE[42S22]: Column not found: 1054 Unknown column 'parent_cat_type' in 'field list'