যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস স্মরণে ব্যতিক্রমধর্মী এক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (২৬ মার্চ) ‘ফিরে দেখা ১৯৭১’ শীর্ষক এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রদর্শনীর আয়োজন করেন ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব আমেরিকার অধ্যাপক ড. আদনান মোর্শেদ।
প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের তথ্যসংবলিত বেশকিছু দুষ্প্রাপ্য বই, ১৯৭১ সালের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ম্যাগাজিন, যুদ্ধকালীন পোস্টারসহ বেশকিছু দুষ্প্রাপ্য স্থিরচিত্র-দলিলাদি ছাড়াও একাত্তরের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত কনসার্ট ফর বাংলাদেশ-এর গানের এল পি ও ঐতিহাসিক লাল সবুজ পতাকাসহ বেশকিছু আইটেম প্রদর্শিত হয়। এ সময় প্রদর্শনীতে প্রায় ২০০ প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশি দর্শণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র উপস্থাপন করেন আহসান আহমাদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদের কন্যা সাদিয়া আহমেদ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তার বাবা বন্দী থাকা অবস্থায় মায়ের কাছে লেখা চিঠি পরে শোনান।
প্রদর্শনীতে এক আলোচনা সভায় অধ্যাপক আদনান মোর্শেদ বলেন, ৫২ বছর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইট নামে এক ভয়াবহ গণহত্যার শিকার হয়েছিল বাঙালিরা। এরপর শুরু হয় বাঙালীর স্বাধীনতার যুদ্ধ। ১৯৭১ বাঙালি জীবনের অন্যতম দিক নির্দেশনার বছর। স্বাধিকার অর্জনের সেই সংগ্রামে নতুন প্রজন্মের মাঝে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা যুদ্ধ শুধু ভারতীয় উপমহাদেশের সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল বৈশ্বিক স্নায়ু যুদ্ধের অন্যতম ঘটনা। ধনতান্ত্রিক আর সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের রাজনৈতিক যুদ্ধের নাটক মঞ্চে বাঙালির সংগ্রাম পেয়েছিল নতুন মাত্রা। ‘ইতিহাস লেখা হয় গবেষণার মাধ্যমে। ইতিহাস একটি চলমান আর গতিশীল বিষয়। ইতিহাস তৈরির বিষয়টি একটি জাতির সাংস্কৃতিক আর মননশীল রাজনৈতিক চরিত্র ফুটিয়ে তুলে,’ বলেন তিনি। এ সময় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, এসোসিয়েটেড প্রেসের প্রাক্তন সাংবাদিক আর্নল্ড জেইটলিন, ভয়েজ অব আমেরিকা বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ইকবাল বাহার চৌধুরী, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা প্রমুখ।
Comments